"হিমেল হাওয়ায় ফাগুনের গান/বসন্ত এলো রাঙাতে প্রাণ" - মৃদু শীতের হিমচাদরে পত্রঝরা পবনোচ্ছ্বাস ও বিকশিত আম্র-মঞ্জরীর আগমনী শুভেচ্ছা নিয়ে হাজির হয় ঋতুরাজ বসন্ত। নবীন ও তারুণ্যের বারতা নিয়ে আসা বসন্তকে বরণ করে নিতে গত ১৪ই ফাল্গুন,১৪৩০ বঙ্গাব্দ/২৭ শে ফেব্রুয়ারি,২০২৪, মঙ্গলবার সাংস্কৃতিক ক্লাব,সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ফেনী ক্যাম্পাস প্রাঙ্গনে আয়োজন করে এক বর্ণিল উৎসব। এদিন সবুজের সমারোহে তরুণ-তরুণীরা মেতেছিল দীপ্ত প্রাণের উচ্ছ্বাসে।
আয়োজনের প্রস্তুতি হিসেবে একদিন আগেই পুরো ক্যাম্পাসের কংক্রিটের ভূ-খন্ডে লাগে আল্পনা-রঙের আগুন। বাহারি রঙের আল্পনায় মনে হয়েছিল বসন্তের সব রঙ ভর করেছে ক্যাম্পাসে।
পুরো ক্যাম্পাস পরিণত হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীর আনন্দ মিলনমেলায়। মেয়েরা বাসন্তী শাড়ি আর খোঁপায় ফুল গুঁজে এবং ছেলেরা পাঞ্জাবি পরে নেমেছিলেন বসন্তবরণে।
সকাল নয়টায় সাংস্কৃতিক ক্লাবের নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেকের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়ে সারাদিনব্যাপী ব্যাচভিত্তিক একক,দ্বৈত ও দলীয় নৃত্য,গান ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মেতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।
কলেজের তৃতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় "তথৈবচ পিঠাঘর"।সেখানে বাঙালির বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী পিঠা-পুলি প্রদর্শনী ও ফুল-জুয়েলারির বিক্রি সবার নজর কাড়ে।
দুপুর দু'টায় কলেজ ক্যাম্পাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবার জন্য আয়োজিত হয় এক প্রীতিভোজের। বিকাল তিনটায় শুরু হয় " আমার জেলা সেরা" বিষয়ক রম্যবিতর্ক যা ফেনী,নোয়াখালী,কুমিল্লা ও পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর শুরু হয় আবীর উৎসব। সবার আবীরমাখা হাসিমুখ জানান দেয় শত দুঃখ-কষ্টের মধ্যেও জীবন রাঙানোর প্রত্যয়।
বসন্তবরণের এই আয়োজন প্রসঙ্গে ২য় ব্যাচের শিক্ষার্থী একা রাণী দাস তার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন - "বসন্তে নিজেকে এবং নিজের ক্যাম্পাসকে বর্ণিল রঙে দেখে ভীষণ ভালোলাগা কাজ করছে" এবং ৩য় ব্যাচের শিক্ষার্থী আশিকুল ইসলাম মাসুম বলেন - "ক্লাস-পরীক্ষার একঘেয়েমির মধ্যে যখন এ দিনটি আসে বন্ধুবান্ধব-সিনিয়র-জুনিয়র আমরা সবাই খুব মজা করে কাটাই"।
কলেজের সাংস্কৃতিক ক্লাবের মেন্টর ও প্রভাষক জনাব রাকিব হাসান বলেন - " বসন্তবরণের এ আয়োজন বাঙালির সংস্কৃতিতে একটি অধুনা সংযোজন। অন্যান্য ক্যাম্পাসের মতোই ফেনী টিটিসির ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরাও অত্যন্ত জাঁকজঁমকতা ও উৎসাহ-উদ্দীপনাময় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বসন্তকে বরণ করে নিচ্ছে। আমি মনে করি এতে প্রতিটি শিক্ষার্থী তার সাংস্কৃতিক মননশীলতার প্রকাশ ও বিকাশের সুযোগ পাচ্ছে।"
কলেজের সুযোগ্য অধ্যক্ষ প্রফেসর রমজান আলী শিকদার তার বক্তব্যে বলেন - " ঐতিহ্য, সৃজন ও উৎকর্ষে সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ফেনী সবসময়ই অগ্রগামী। বসন্তবরণ উৎসব-১৪৩০ তারই বহিঃপ্রকাশ।"